রংপুর থেকে,শাহ মোহাম্মদ রায়হান বারী:
তিস্তা নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে শিবদেব সাস্থসেবা ক্লিনিক। কয়েক দিন আগেও বিদ্যুৎ ও সোলারের আলোয় আলোকিত ছিল তিস্তা নদী বেষ্টিত রংপুরের পীরগাছা উপজেলার নয়ারহাট বাজার। চারদিকে ছিল সবুজে ঘেরা গাছপালা ও ফসলের খেত। চরাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবায় ছিল শিবদেব সাস্থসেবা ক্লিনিকে। এ ক্লিনিক থেকেই চরের মানুষজন চিকিৎসা সেবা নিতেন। কিন্তু চোখের সামনেই তিস্তার ভাঙনে নদীগর্ভে চলে গেল গরিবের চিকিৎসালয় শিবদেব ক্লিনিকটি। আশে পাশে যে ঘনবসতি ছিল তাও বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়া নয়ারহাট বাজারের বেশির ভাগ অংশও চলে গেছে তিস্তার পেটে।
মঙ্গলবার(৩১আগষ্ট) স্বরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের শিবদেব গ্রামের শেষ অংশে নয়ারহাট বাজার। যার আশে পাশে ছিল ঘনবসতি, দ্বিতল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিকিৎসা ও সাস্থ সেবায় ক্লিনিক। আর চারদিকে সবুজে ঘেরা গাছপালা ও ফসলের খেত। এখন কিছুই নেই। সব নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
গত ৫ বছর আগে তিস্তা পেটে চলে গেছে দ্বিতল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি।এরপর একে একে গাছপালা,ফসলি জমি চলে যায়। পাশেই নয়ারহাট বাজারে চলছিল বিদ্যালয়ের কাজ। সেটিও সরিয়ে নিয়া যাওয়া হয়েছে অনেক দূরে।
চরাঞ্চলের গরিব-অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবায় থাকা শিবদেব ক্লিনিকটিও গত সেমবার চলে গেছে রাক্ষসী তিস্তা'র পেটে। নিভে গেছে গরিবের বাতিঘর। এক সময়ের মানচিত্রে থাকা গ্রামটি এখন শুধুই স্মৃতি।শিবদেব-নয়ারহাট এলাকার নদী ভাঙনের শিকার শতাধিক পরিবার এখন আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন স্থানে। অনেকে ভাড়াটে জমি খুঁজছে আশেপাশে। নদীগর্ভে বিলীন শিবদেব ক্লিনিকের সব আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে। যা নয়ারহাট এলাকা থেকে ২ কিলোমিটার দূরে। ফলে চিকিৎসা সেবা পেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই এলাকার মানুষজনদের।
নদী পাড়ের কালু ফকির,আশরাফ মিয়া,জসিম উদ্দিন,আকলিমা বেগম,বলেন,নদীতেই তাঁদের সব শেষ। তাদেরকে নিঃস্ব করে তিস্তার ভয়াল গ্রাসে,একে একে সব খেয়ে ফেলেছে তিস্তা নদী।বারবার নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া ও কমায় নদীর ভাঙন তীব্র হচ্ছে।নিঃস্ব অসহায় নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার হতদরিদ্র মানুষজনের শেষ আসার স্থল স্বাস্থ্যসেবা চিকিৎসা কেন্দ্র টি ও তিস্তা নদীর ভয়াল গ্রাসে বিলীন হয়ে যাওয়ায় তাঁদের চিকিৎসা সেবায় ভাটা পড়েছে। অনেক দূরে ক্লিনিকের কাজ চলায় তাঁরা তেমন কোনো সেবা পাচ্ছেন না। স্বাস্থ্যকর্মীরাও তাঁদের খোঁজ নিচ্ছে না বলে অনেকের অভিযোগ।
শিবদেব ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা ফরহাদ হোসেন বলেন,ভাঙনের কবলে পরায় আগেই ক্লিনিকের সব মালামাল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।আমরা এখন আশ্রয় কেন্দ্রে ক্লিনিকের কার্যক্রম চালাচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবু আল হাজ্জাজ বলেন,বিকল্প হিসেবে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে কার্যক্রম চলছে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।